পাইলস বা অর্শ রোগ কি ?চলুন জেনে আসি লক্ষণ ও প্রতিকার
হেমোরয়েড সাধারণত পাই্লস বা অশ্ব রোগ নামে পরিচিত।পাইলস মূলত আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি রোগ এটি এমন একটি রোগ যার অবস্থান মলদ্বারের ওপরে হয়ে থাকে আবার কখনো মলদ্বারের ভেতরের অংশে হয়ে থাকে এটি খুব সাধারণ একটি রোগ প্রতি চারজন প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে তিন জনের কোন না কোন সময় হয়ে থাকে।
আমাদের সমাজে এখনো এই রোগ হলে প্রকাশ করতে চায় না লোক লজ্জায় ভয়ে,যার কারণে অনেক সময় অনেক বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।এমনকি ক্যান্সার হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে অনেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইট,ফেসবুকের মাধ্যমে এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে থাকেন চলুন জেনে আসি হেমরয়েড বা পাই্লস সম্পর্কে নিচে তার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সূচীপত্র
- পাইলস কি
- হেমোরয়েড বা পাইলস দুই ধরনের
- পাইলস এর লক্ষণ ও উপসর্গ হলো
- হেমোরয়েড বা পাই্লস এর কারণ হল
- হেমোরয়েড বা পাইলসে এর কার্যকারী উপায়
- পাইলস বা অর্শ রোগের প্রতিকার
- হেমোরয়েড বা পাইলস এর চিকিৎসা
পাইলস কি
পাইলস মূলত একটি রোগ এর নাম হেমরয়েড বা পাইলস বাংলায় অপর নাম হল অর্শ রোগ পাইলস রোগ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে।এটি আমাদের শরীরের অন্যান্য জায়গায় না হয়ে মলদ্বারে হয়ে থাকে এটির কারণে মানুষের শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয় অনেক জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয় দীর্ঘদিন এই রোগ হলে ক্যান্সারের রূপান্তর হয়।
এটি মূলত টয়লেট কষা হলে হয়ে থাকে। এই কারণে কৃমি বেড়ে যায়।হেমরয়েড বা পাইলস শরীরে দেখা দিলে দেরি না করে কোন রকম লজ্জা না করে সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন তাহলে অতি স্বল্প সময় এই রোগ হতে মুক্তি মিলবে।
হেমরয়েড বা পাইলস দুই ধরনের
হেমোরয়েড বা পাইলস দুই ধরনের হয়। বাহিক্য পাইলস ও অভ্যন্তরীণ পাইলস ।নিচে বাহিক্য ও অভ্যন্তরীণ পাইলস সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
বাহিক্য পাইল
বাহিক্য পাইলস মূলত মলত্যাগের আশেপাশে ত্বকের ওপরে হয়।এটি সাধারণত অস্বস্তিকর হয় এটি বাইরে থেকে দেখা ও বোঝা যায় রক্তপাত ও রক্ত জমাট বাঁধে সময় বাড়ার সাথে সাথে তীব্র ব্যথা হয়।ধীরে ধীরে ত্বকের চারিপাশে ছড়িয়ে পড়ে পাইলসগুলো নীল ও বেগুনি রং এর দেখাই। ডক্টর এর পরামর্শ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন।তাহলে হেমোরয়েড বা পাইলস হতে মুক্তি মিলবে।
অভ্যন্তরীণ পাইলস
অভ্যন্তরীণ পাইলস সাধারণত মলদ্বারের ভেতরে অবস্থান করেন এটি বাইরে থেকে বোঝা যায় নন।এটি মলত্যাগ করার সময় ভেতর থেকে মাংসপিণ্ডের মতো বের হয়ে আসে।আবার ভিতরে ঢুকে যাই অনেক সময় বাইরে বের হয়ে থাকে এটি বড় না হলে বোঝা যায় না ।তবে এটি রক্তপাত করে ব্যথা করে চুলকানি হয়ে থাকে খুব দ্রুত ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় কারণ মলত্যাগ করার পর ভালো মতো পরিষ্কার না করলে কোন রকম জীবাণু থেকে গেলে সেটা থেকে অনেক বড় ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।এটি অনেক সময় অনেক বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে।
পাইলস এর লক্ষণ ও উপসর্গ হলো
- মলত্যাগ করার সময় কোন প্রকার ব্যথা ছাড়াই রক্তে কথা হয়।
- অনেক সময় চারিপাশে ব্যথা বা চুলকানি অনুভব হয়।
- মলত্যাগ ত্যাগ করার সময় রক্তপাত হয়।
- টয়লেট কষা হলে ব্যথা বা রক্তপাতের প্রবণতা বেড়ে যায়।
- অনেক সময় ভেতর থেকে মাংস পেশি মতো একটি অংশ বের হয়ে আসে।
- এই রোগের কারণে মলত্যাগের আগে ও পরে এক প্রকার ছোট ছোট কৃমি প্রবণতা দেখা দেয়।
- কোন কোন ক্ষেত্রে কোন প্রকার চুলকানি,ব্যথা ও রক্তপাত না হলেও একটা সময় পার করার পর সমস্যা দেখা দেই।
হেমরয়েড বা পাই্লস এর কারণ হল
এই রোগ মূলত মলদ্বারের চারিপাশে প্রসারিত শিরাগুলিতে বিভিন্ন সময় চাপের ফলে সেগুলো ফুলে যেতে পারে,যার ফলে হেমরয়েড বা পাই্লস হতে পারে। চলুন নিচে জেনে আসি আরো কিছু কারণ।
- পায়ুপথে সহবাস করলে।
- মন ত্যাগ করার সময় অতিরিক্ত শক্তি বা প্রয়োগ এই রোগ হয়।
- গর্ভাবস্থায় অবস্থায় নানা জটিলতার কারণে হয়।
- পরিমাণে কম ফাইবারযুক্ত ডায়েট করলে।
- অধিক স্থূলতার কার।
- টয়লেট কষা হলে।
- টয়লেটের চাপ আসলে সময়মতো টয়লেট না করার কার।
- বারবার ডায়রিয়া হলে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য এই রোগ হয়।
হেমায়েড বা পাইলসে এর কার্যকারী উপায়
- প্রচুর তরল খাবার পান করতে হবে।
- বেশি শাকসবজি খেতে হবে।
- প্রচুর ফাইবার যুক্ত খাবার খেতজুক্ত।
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
- দীর্ঘ সময় বসা আর দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলতে হবে।
- বেশিক্ষণ মল ধরে রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- চা কফি বা ক্যাফেইন এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
- ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করতে হবে।
- প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশস্যকে এড়িয়ে চলতে হবে।
- পানি,চিজ এবং তরল দুধ জাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে।
- অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার কে বর্জন করতে হবে।
পাইলস বা অর্শ রোগের প্রতিকার
এখন বর্তমান সময়ে চারজনের মধ্যে তিনজনেরই কোন না কোন ভাবে পাইলস হয়ে থাকে।এই রোগটা মলদ্বারের আশেপাশে হবার কারণে সবাই রোগটাকে আড়াল করার চেষ্টা করে। সময়মতো চিকিৎসা করায় না অনেক সময় বিভিন্ন গাছামো,কবিরাজি ওষুধ সেবন করে। অনেকে আবার হোমিও ওষুধও খেয়ে থাকেন। বিভিন্ন হাতুড়ি চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিভিন্ন ক্যামিকেল মলদ্বারে ব্যবহার করেন।এবং অনেক দুর্দশা ভোগ করেন।
আমাদের উচিত রোগ আড়াল না করে সময় মত চিকিৎসা করানো। বর্তমান সময় সব কিছু অনেক আপডেট হয়ে গেছে।আমরা যেকোনো বিষয় নিয়ে অনলাইন সাচ করলে তার সম্পরকে ভাল খারাপ সব জানতে পারি। তাই আমাদের সকলের উচিত সচেতন থাকা।লজ্জা না করে ডক্টর এর কাছে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা উত্তম।
হেমোরয়েড বা পাইলস এর চিকিৎসা
রোগটি আমাদের নিকটে অতি পরিচিত।চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে হেমোরয়েড এবং বাংলায় অর্শ রোগ বলে।চিকিৎসার জন্য বহু ধরনের পদ্ধতি রয়েছে যেমন ইনজেকশন,লেজার থেরাপি,এনাল ডাইলেটেশন,ইনফ্রয়েড,ফটো কোয়াগুলেশন ইত্যাদি এইসব ধরনের পদ্ধতি রয়েছে প্রচলিত অপারেশন আর লেজার অপারেশন একই রকম ঘা শুকাতে দুই এক মাস সময় লাগে এবং প্রচলিত অপারেশনের মত করে জটিলতা দেখা দিতে পারে
তাই কাটা ছেড়া ৯০/৯৫% পাইলস বা অশ্ব রোগের সমাধান সম্ভব হল রিংলাইগেশন,ল্যাংগো অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করান হয়। এছাড়া বিশ্বে সব ধরনের পদ্ধতিতে মধ্যে মেরিট এবং ডিমরিট বিবেচনা করলে দেখা যায় দুইটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত।আর সেগুলো হচ্ছে প্রচলিত অপারেশন রিংলাইগেশন ও ল্যাংগো
শেষ কথা
পায়ুপথে রোগকে অধিকাংশ মানুষ হেমোরয়েড পাইলস বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীদের এই সমস্যা দেখা যাই।আর সমস্যা গুলো কথা গোপন করে রাখেন চিকিৎসা করতে দেরি করে। তাই দেরি না করে দ্রুত নিকটবর্তী কোন ডক্টর এর কাছে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।কবিরাজী,হোমিওপ্যাথি ঔষধ গ্রহণ না করে ভালো ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করলে এই রোগ সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url